Bangla Stories pdf in India

Bangla Stories pdf in India 
 আমার লেখা একটি প্রবন্ধ গল্প নিতাই গৌরাঞগ



নিতাই গৌরাঙ্গ চাকরি করতেন বোম্বে রোড এর জঞগল গেইট। একটি প্লাস্টিক ফ্যাক্টরিতে। জায়গাটি হাওড়ার সলফ হাই রোড থেকে 6 কিলোমিটার দূরে সেখান থেকে আর ভেতর দিয়ে গেলে আন্দুল রোড প্রায় মিনিট কুড়ির ব্যবধান। নিতাইয়ের বাড়ি জলপাইগুড়ি। সে 3 বছর যাবৎ হাওড়া জেলায় কাজ করে ,কিন্তু কোনদিনও চিড়িয়াখানা কলকাতার জাদুঘর ভিক্টোরিয়া কিছুই দেখা হলো না। এত কাছে থেকেও দেখার সাধ মেটেনা । কতো লোক গাড়ি ভাড়া করে দেখতে আসে কিন্তু আমার আর হয় না ,তাই সে ঠিক করল সামনের রবিবার যাব। বড় সাধ করে সে চিড়িয়াখানা দেখতে গেল বন জঙ্গলের কত জিনিস প্রত্যক্ষ করে ভিক্টোরিয়া ঠাসা গাদা দেখে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে রাত্রি দশটা। তড়িঘড়ি বাসে চেপে হাওড়া বাস স্ট্যান্ডে পৌঁছায় কিন্তু কি হবে রাত্রে যায় এখন 11 টা। নিতাই গৌরাঙ্গ বাস স্ট্যান্ড এর খোঁজ নিল খোঁজ নিয়ে জানতে পারল এখন আর বাস নেই অনেকক্ষণ অপেক্ষা করলো এদিকে স্ট্যান্ডের কর্মচারীরাও স্ট্যান্ডে থাকতে দিল না। অবশেষে ফুটপাতে সে চুপ করে বসে রইল মশার কামড়ে ঠিকমতো বসে থাকাও যায়না তখন রাত্রি 1:30 হবে হঠাৎ একটি ট্যাক্সি এসে থামল ঠিক হাওড়া ব্রিজ এবং বাসস্ট্যান্ডের মাঝামাঝি হবে। একটি সদ্যজাত বাচ্চা ফেলে দিয়ে পালিয়ে গেল । শিশুটির কান্না আমাকে অস্থির করে দিল । শিশুটিকে কোলে নিয়ে চিন্তা করতে লাগলাম ওরা কারা ওরা শহরের মানুষ এই ছেলেটিকে আহা আর জঙ্গল গেইট গেলাম না ।(অর্থাৎ তার কর্মস্থানে গেল না) ছেলেটিকে কোলে নিতে একদম চুপ হয়ে গেল যেন জন্মদাতার পেয়েছে অবস্থার পরিস্থিতিতে নিতাই বাচ্চাটি নিয়ে বাড়ি ফিরল তার গ্রামের নাম ময়নাগুড়ি বিয়ে হয়েছিল 4 বছর আগে তার স্ত্রীর নাম রাধিকা রাধিকা গৌরাঙ্গ কোন সন্তানাদি হয়নি বাড়ি পৌছে তার স্ত্রী সহ পরিবারের সবাইকে সব কথা খুলে বলল রাধিকা শিশুটিকে কোলে নিয়েই বললো ইশ্বর সবার মনের কথা বোঝেন তাইতো এই মহিমা। রাধিকা ও মন ভরে গেল খুব খুশি হয়ে নাম রাখলো দুলাল ।তারপর নিতাই যে কাজ করে তার উন্নতির শেষ নেই বেশ ধনবান হয়ে উঠলো তার আরও একটি ছেলে ও একটি মেয়ে সৃষ্টি কর্তা দিয়েছে দুই ছেলের দুলাল ও মৃণাল মেয়ে সুপর্ণা সংসার সবদিক দিয়ে পরিপূর্ণ । তার ছেলে মেয়ের চেয়েও বেশি ভালবাসতেন দুলালকে তবুও দুলালের মুখপানে তাকালেই বারবার মনে পড়তো সেই দিনটার কথা নিতাই তার বিবেক কেই প্রশ্ন করে একিরকম রহস্য কে ছিল তারা কেউ জানলো না সেই পাষন্ডের পাপাচার মনে নেই সেই কথা আর মনে করতেও চাইনা সে এখন আমার ছেলে সে তো আমার ঘরের দিবাকর তার আভাস এই যেন আমার এত সুখ । সুপর্ণা একদিন দুলালের কাছে বায়না ধরল দাদা ও দাদা আমি এবার পরীক্ষায় পাস করলে তুমি কি দেবে দুলাল বললো আচ্ছা ঠিক আছে তোকে একটা সাইকেল কিনে দেবো সুপর্ণা ফার্স্ট হয়েছে শুনেই দুলাল সাইকেল কিনতে গেল সাইকেলের দাম 3000 কিন্তু দুলাল এর কাছে টিফিন খরচ থেকে জমানো মাত্র বারশো টাকা আছে বাবার দেওয়া সোনার আংটি বিক্রি করে বাকিটা জোগাড় করল। সাইকেল স্টোরে গিয়ে টাকা পেমেন্ট করে দিল স্টোরেজে সাইকেল ফিটিং করত সে দুলালের চেনাজানা দুলাল তাকে বলল তুমি যাও আমি আমি ফিটিং করে দিয়ে আসছি। ফিটিং করতে ঘন্টাদুয়েক সময় লাগবে। দুলাল বাড়ি ফিরল দুলালেরর মা রাধিকা সবার জন্য ভাত বেড়েছে দুলাল সবাই একসঙ্গে খেতে বসেছে মা দুলালের হাতের দিকে তাকিয়ে বলল তোর আংটিটা দুলাল চুপ করে রইল সে কোনদিন মিথ্যা বলেনি তাই কিছু বলতে পারেনি তাই ব্যাপারটা বুঝে উঠতে পারল না। দুলালের বাবা দুলাল কে ধমক দিয়ে বলল কিছু বলছিস না যে তবুও চুপ করে রইলো বাবার দেওয়া জিনিস বিক্রি করেছে একথা বলবে কি করে একটা ঠাস করে চড় মেরে বলল তোর মুখে কথা নেই। এই মুহূর্তে সাইকেল মেকানিক সাইকেলটি নিয়ে হাজির দুলাল দাদা হেব্বি হয়েছে তোমার বোন এর সাইকেলটা । ব্যাপার বুঝতে আর বাকি রইলো না পিতা হয়ে ছেলের কাছে ভুল স্বীকার করতেও পারেনা আর কিছু কাউকে বলার প্রয়োজন মনে করে না আমি আমি কি দুলাল বাবা তোমাকে বাকিটা বলতে হবেনা, স্কুল থেকে এসে ভাত পানি দেখে ভয় কোরো না খেয়ে নে। নিতাই তো বরাবরই জানতো যেদিন দুলালকে নিয়ে এসেছি সেদিন হতেই তার উন্নতি


ইতি মোঃ আসাদুল ইসলাম

Powered by Blogger.